বাসর রাতে বিড়াল মারা |
আমাদের দেশে বাসর ঘরে বিড়াল মারার গল্প নামে একটি প্রবাদ প্রচলিত রয়েছে এর সম্পর্কে সঠিক গল্প আমরা জানি না। অনেকের মতোই কৌতুহল বসত এই প্রশ্নটি যেতে বয়সে বাসর রাতে বিড়াল মারার অর্থ কি।
আসলেই কি বাসর রাতে বিড়াল মারতে হয় নাকি এটি কেবল একটি রূপক প্রবাদ গল্প বা লোককথা। তো চলুন জেনে নেই আসল গল্পটি কি আর কেনই বা এই গল্পটি এত যুগ যুগ ধরে চলে আসছে সকলের শব্দটি সম্পর্কে কমবেশি জানে।
বাসর ঘরে বিড়াল মারার গল্প
গল্পটি মূলত ইরানি গল্প। একসময় পারস্য থেকে অনেক ব্যবসায়ী এদেশে ব্যবসা করতে এসেছিল। তাঁদের কেউ কেউ এদেশে স্থায়ীভাবে থেকে গিয়েছিল। ধারণা করা হয় তাঁদের মাধ্যমে গল্পটি এদেশে প্রচলিত হয়েছে। তবে গল্পটি এখন আমাদের হয়ে গেছে।
বাংলা কষ্টের sms বিরহের এস এম এস - sad sms
in bangla
এর মধ্যে আর সেই ইরানি আমেজ নেই। গল্পটি মুখে মুখে প্রচলিত হতে হতে আমাদের অনেক আবহ এর মধ্যে ঢুকে গেছে। অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে যে বাসর রাতে বিড়াল মারা মানে সে রাতে কামলীলা সাঙ্গ করা। এটা আসলে ভুল। আমাদের দেশীয় আবহে চলুন জেনে আসি এর ইতিহাস
গ্রামের নাম মহব্বতপুর। এই গ্রামে বাস করত দুই যুবক। একজনের নাম আলাল এবং আরেকজনের নাম দুলাল। তারা দু'জন ভালো বন্ধু এবং ভাই ছিল। তাঁদের বন্ধুত্ব এমনি ছিল যে, একজন আরেকজনকে রেখে কিছু করতে পারতো না। আলাল ছিল বোকা কিছিমের আর দুলাল ছিল একটু চালাক কিছিমের। এছাড়াও আলাল মেয়েদের দেখে ভয় পেত। মেয়েদের সামনে গেলে তার হাত-পা কাঁপত।
আর দুলালের এই সমস্যা ছিল না। সে উল্টো সুন্দরী মেয়ে দেখলে আলালকে দেখিয়ে বলত-'দেখ, দেখ কত সুন্দর মেয়ে , চল গিয়ে কথা বলি?' এটা শুনেই আলালের হাত-পা কাঁপা শুরু করত। একদিন দুলাল বল-'চল বিয়ে করে ফেলি, তাহলে তোর আর মেয়েদের দেখে ভয় লাগবে না।' আলাল ভাই এর কথায় রাজি হয়ে গেলো। যেই ভাবা সেই কাজ সেই কাজ। তারা বিয়ে করে বউ নিয়ে আসলো।
আলাল ছিল বোকা সে বাসর ঘরে বউ এর সাথে কি কি করবে সে বিষয়ে তালিম নিচ্ছিল দুলাল এর কাছ থেকে। দুলাল বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে বাসর ঘরে ঢুকলো। সে তার নতুন বউ এর ঘোমটা খুলতে গেলো আর বউ তাকে ধরাম করে একটি চড় বসিয়ে দিল। তার বউ বলল-'তুমি কেমন পুরুষ, অনুমতি ছাড়া বউ এর ঘোমটায় হাত দিলে যে?' দুলাল একদম থ-বনে গেল এবং বউ এর কথামত খাটের একপাশে শুয়ে পড়লো।
অন্যদিকে আলাল বেশ ভয়ে ভয়ে বাসর ঘরে ঢুকলো। সে তার বউ এর ঘোমটা খুলতে যাবে এমন সময় ম্যাও বলে আওয়াজ শুনলো। সে দেখলো যে একটা বিড়াল ঘরে ঢুকেছে। সে বিড়ালকে অনেক অপছন্দ করতো। বিড়াল দেখে তার মেজাজ বিগঢ়ে গেল।
সে পিড়িতে একটা লাথি দিয়ে বিড়ালের দিকে ছুঁড়ে মারলো। পিড়ির আঘাতে বিড়ালটি সেখানে মরে রইলো। এটা দেখে আলালের বউ বেশ ভয় পেল। সে ভাবলো যে বিড়ালকে এভাবে মারতে পারে সে না জানি মানুষকে কিভাবে মারে? সে নিজেই ঘোমটা খুলে আলালের সেবা করতে লাগলো। পরের দিন প্রত্যেক ভাই তাঁদের রাতের অভিজ্ঞতা শুনতে চাইলো। আলাল তার অভিজ্ঞতার কথা তার ভাইকে বলল।
সে এখন আর মেয়েদেরকে ভয় পায়না। তার বউ তার সব কথা শুনে। সব শুনে দুলাল খুব আফসোস করতে লাগলো। সে ভাবলো সেও একটা বিড়াল মারবে। সেদিন দিন রাতে সে একটা বিড়াল ধরে তার বউ এর সামনে মারতে উদ্ধত হল। সেটা দেখে দুলালের বউ একটা দা নিয়ে দাবড়াতে আসলো। তার বউ বল- 'তোমার কোন মায়া দয়া নেই, অবলা জীবকে মারতে আসছো?
দুলাল ভাবলো বিড়ালটা দেরি করে মারা হয়ে গেল। বাসর রাতে মারলে তার বউ তার নিয়ন্ত্রনে থাকতো। সে থেকে বউকে নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য বাসর ঘরে বিড়াল মারার গল্প প্রচলিত হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে বাসর রাতে বিড়াল মেরে কিছু হয়না। এগুলো শুধুই গল্প কথা। তাই বলছিলাম কি, বিড়ালটাকে একটু বুঝে শুনেই মারুন!
বাসর রাতে বিড়াল মারার অর্থ কি গল্পটি কেবলই একটি গল্প নাকি বাস্তবে ঘটে ছিল তারও কোনো সঠিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি গল্পটি সম্পর্কে আপনার যদি কোন মূল্যবান মতামত থাকে বা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি অবশ্যই আমাদেরকে জানাতে পারেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন