স্বাধীনতা দিবসের ৮টি বিখ্যাত কবিতা

২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস কবিতা


 ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস নিয়ে  বাংলাদেশি বিখ্যাত কিছু কবিতা লেখা হয়েছে আজকে পাঠকদের জন্য ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস কবিতা এর এই পর্বে বিখ্যাত কয়েকটি কবিতা তুলে ধরা হলো। 


 চলুন ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস কবিতা গুলো পড়ে নেই


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ১

স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো

- নির্মলেন্দু গুণ

আরো  পরুনঃ   মানুষ কবিতা- গাজী-ভাই

  

একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,

এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,

এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না।

তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?

তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে

ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?

জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত

কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ

কবির বিরুদ্ধে কবি,

মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,

বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,

উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,

মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ …।

হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,

শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি

একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে

লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প।

সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর।

না পার্ক না ফুলের বাগান, -এসবের কিছুই ছিল না,

শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত

ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়।

আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল

এই ধু ধু মাঠের সবুজে।

কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে

এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,

লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,

পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক।

হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,

নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে

আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে।

একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল

প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,

রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷

তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?

গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ২


কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প

-রুদ্র মুহান্মদ শহীদুল্লাহ


তাঁর চোখ বাঁধা হলো।

বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত করলো তার মুখ।

থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা-রক্তে একাকার হলো,

জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত ঝওে পড়লো কংক্রিটে।

মা…মাগো…চেঁচিয়ে উঠলো সে।

পাঁচশো পঞ্চান্নো মার্কা আধ খাওয়া একটা সিগারেট

প্রথমে স্পর্শ করলো তার বুক।

পোড়া মাংসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো ঘরের বাতাসে।

জ্বলন্ত সিগারেটের স্পর্শ

আমারা কথা বলবো।

লাঠিচার্জ আমাদের ফেরাতে পারেনি

কাঁদানে গ্যাস আমাদের ফেরাতে পারেনি

র্ইাফেল আমাদের ফেরাতে পারেনি

মেশিন গান আমাদের ফেরাতে পারেনি -

আমারা এসেছি,

আমারা আমাদের গৃহহীনতার কথা বলবো।

কৃষক তোমাদের পক্ষে যাবে না

শ্রমিক তোমাদের পক্ষে যাবে না

ছাত্র তোমাদের পক্ষে যাবে না

সুন্দর তোমাদের পক্ষে যাবে না

স্বপ্ন তোমাদের পক্ষে যাবে না -

তারা সকলেই কষ্টে আছে

তারা সকলেই অনটনে আছে

তারা সকলেই বিক্ষোভের হাত তুলেছে।

তোমাদের পক্ষে যাবে কুকুর

তোমাদের পক্ষে যাবে সুবিধাভোগী

তোমাদের পক্ষে যাবে বিত্তবান নেকড়েরা।

বৃক্ষ তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে

শস্য তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে

রক্ত তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে

তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত শিশুরা।

লক্ষ মৃত্যু আমাদের ফেরাতে পারেনি

আমারা এসেছি।

আমারা আমাদের শিক্ষাহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের চিকিৎসাহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের গৃহহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের বস্ত্রহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের ক্ষুধা ও মৃত্যুর কথা বলবো।

আমরা তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা থেকে এসেছি

আমরা সিপাহী আন্দোলনের দুর্গ থেকে এসেছি

আমরা তেভাগার কৃষক, নাচোলের যোদ্ধা

আমরা চটকলের শ্রমিক, আমরা সূর্যসেনের ভাই

আমরা একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ থেকে এসেছি

কাঁধে স্টেন, কোমরে কার্তুজ, হাতে উন্মত্ত গ্রেনেড -

আমরা এসেছি।


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ৩


অস্ত্র সমর্পণ

-হেলাল হাফিজ


মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।

নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে।

বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে

তাঁবুর ভেতরে ঢুকে দেখেছি তোমাকে বারবার কতোবার।

মনে আছে, আমার জ্বালার বুক

তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে উঠে তুমি

বিস্ফোরণে প্রকম্পিত করতে আকাশ, আমাদের ভালবাসা

মুহূর্তেই লুফে নিত অত্যাচারী শত্রুর নি:শ্বাস।

মনে পড়ে তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের

মধ্যভাগ রেখে, বুকে রেখে হাত

কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো কালো রাত!

মনে আছে, মনে রেখো

আমাদের সেই সব প্রেম-ইতিহাস।

অথচ তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে

সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে

মানুষকে ভালোবাসা ভালোবাসি বলে।

যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,

যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে

ভেঙে সেই কালো কারাগার

আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ৪

এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়

 হুমায়ুন আজাদ


এ লাশ আমরা রাখবো কোথায় ?

তেমন যোগ্য সমাধি কই ?

মৃত্তিকা বলো, পর্বত বলো

অথবা সুনীল-সাগর-জল-

সব কিছু ছেঁদো, তুচ্ছ শুধুই !

তাইতো রাখি না এ লাশ আজ

মাটিতে পাহাড়ে কিম্বা সাগরে,

হৃদয়ে হৃদয়ে দিয়েছি ঠাঁই।


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ৫

রিপোর্ট ১৯৭১

আসাদ চৌধুরী


প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল

বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম

আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।

এ-সব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে

বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়-

বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে

তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে

শুধু মুখ টিপে হাসে।

প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে

কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা-

সূর্য্যকেও পর্দা করে এ-সব রমণী।

অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার

সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা

সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে-

আমি তার সুরকার- তার রক্তে স্বরলিপি লিখি।

মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী

গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়

মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে-ঝিয়ে

খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো,

অস্ফুট গোলাপ-কলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে

কার কী বা আসে যায়।

বিপন্ন বিস্ময়ে কোরানের বাঁকা-বাঁকা পবিত্র হরফ

বোবা হ’য়ে চেয়ে দ্যাখে লম্পটের ক্ষুধা,

মায়ের স্নেহার্ত দেহ ঢেকে রাখে পশুদের পাপ।

পোষা বেড়ালের বাচ্চা চেয়ে-চেয়ে নিবিড় আদর

সারারাত কেঁদেছিলো তাহাদের লাশের ওপর।

এদেশে যে ঈশ্বর আছেন তিনি নাকি

অন্ধ আর বোবা

এই ব’লে তিন কোটি মহিলারা বেচারাকে গালাগালি করে।

জনাব ফ্রয়েড,

এমন কি খোয়াবেও প্রেমিকারা আসে না সহজ পায়ে চপল চরণে।

জনাব ফ্রয়েড, মহিলারা

কামুকের, প্রেমিকের, শৃঙ্গারের সংজ্ঞা ভুলে গ্যাছে।

রকেটের প্রেমে পড়ে ঝ’রে গ্যাছে

ভিক্টোরিয়া পার্কের গীর্জার ঘড়ি,

মুসল্লীর সেজদায় আনত মাথা

নিরপেক্ষ বুলেটের অন্তিম আজানে স্থবির হয়েছে।

বুদ্ধের ক্ষমার মূর্তি ভাঁড়ের মতন

ভ্যাবাচেকা খেয়ে প’ড়ে আছে, তাঁর

মাথার ওপরে

এক ডজন শকুন মৈত্রী মৈত্রী ক’রে

হয়তো বা উঠেছিলো কেঁদে।


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ৬

শহীদদের প্রতি

 __আসাদ চৌধুরী

তোমাদের যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

শেষ কথাটি সুখের ছিল ?

ঘৃণার ছিল ?

নাকি ক্রোধের,

প্রতিশোধের,

কোনটা ছিল ?

নাকি কোনো সুখের

নাকি মনে তৃপ্তি ছিল

এই যাওয়াটাই সুখের।

তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়

গভীর নদী যেমন বাঁকা

স্রোতটিকে লুকায়

যেমন পাখির ডানার ঝলক

গগনে মিলায়।

সাঁঝে যখন কোকিল ডাকে

কারনিসে কি ধুসর শাখে

বারুদেরই গন্ধস্মৃতি

ভুবন ফেলে ছেয়ে

ফুলের গন্ধ পরাজিত

স্লোগান আসে ধেয়ে।

তোমার যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ৭

সংগ্রাম চলবেই 

– সিকান্দার আবু জাফর

রক্তচোখের আগুন মেখে ঝলসে যাওয়া আমার বছরগুলো

আজকে যখন হাতের মুঠোয় কণ্ঠনালীর খুন পিয়াসী ছুরি

কাজ কি তবে আগলে রেখে বুকের কাছে কেউটে সাপের ঝাপি

আমার হাতেই নিলাম আমার নির্ভরতার চাবি

তুমি আমার আকাশ থেকে সরাও তোমার ছায়া

তুমি বাংলা ছাড়ো


অনেক মাপের অনেক জুতোর দামে তোমার হাতে

দিয়েছি ফুল হৃদয় সুরভিত

সে ফুল খুঁজে পায়নি তোমার চিত্তরসের ছোঁয়া

পেয়েছে শুধু কঠিন জুতোর তলা

আজকে যখন তাদের স্মৃতি অসন্মানের বিষে

তিক্ত প্রানে শ্বাপদ নখের জ্বালা

কাজ কি চোখের প্রসন্নতায় লুকিয়ে রেখে প্রেতের অট্টহাসি

আমার কাঁধেই নিলাম তুলে আমার যত বোঝা

তুমি আমার বাতাস থেকে মুছো তোমার ধূলো

তুমি বাংলা ছাড়ো


একাগ্নতার স্বপ্ন বিনিময়ে মেঘ চেয়েছি

ভিজিয়ে নিতে যখন পোড়া মাটি

বারে বারেই তোমার খরা আমার খেতে বসিয়ে গেছে ঘাঁটি

আমার প্রীতি তোমার প্রতারনা

যোগ বিয়োগে মিলিয়ে

নিলে তোমার লাভের জটিল অন্কগুলো

আমার কেবল হাড় জুড়ালো হতাশ শ্বাসের ধূলো


আজকে যখন খুঁড়তে গিয়ে নিজের কবরখানা

আপন খুলির কোদাল দেখে সর্বনাশা বজ্র দিয়ে গড়া

কাজ কি দ্বিধায় বিষন্নতায় বন্দী রেখে ঘৃনার অগ্নিগিরি

আমার বুকেই ফিরিয়ে নেব ক্ষীপ্ত বাঘের থাবা

তুমি আমার জল স্থলের মাদুর থেকে নামো

তুমি বাংলা ছাড়ো


২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস  কবিতা - ৮

বন্দী শিবির থেকে 

__শামসুর রাহমান

ঈর্ষাতুর নই, তবু আমি

তোমাদের আজ বড় ঈর্ষা করি। তোমরা সুন্দর

জামা পরো, পার্কের বেঞ্চিতে বসে আলাপ জমাও,

কখনো সেজন্যে নয়। ভালো খাও দাও,

ফুর্তি করো সবান্ধব

সেজন্যেও নয়।


বন্ধুরা তোমরা যারা কবি,

স্বাধীন দেশের কবি, তাদের সৌভাগ্যে

আমি বড়ো ঈর্ষান্বিত আজ।

যখন যা খুশি

মনের মতো শব্দ কী সহজে করো ব্যবহার

তোমরা সবাই।

যখন যে শব্দ চাও, এসে গেলে সাজাও পয়ারে,

কখনো অমিত্রাক্ষরে, ক্ষিপ্র মাত্রাবৃত্তে কখনো-বা।

সেসব কবিতাবলী, যেন রাজহাঁস

দৃপ্ত ভঙ্গিমায় মানুষের

অত্যন্ত নিকটে যায়, কুড়ায় আদর।

 

অথচ এদেশে আমি আজ দমবদ্ধ

এ বন্দী-শিবিরে

মাথা খুঁড়ে মরলেও পারি না করতে উচ্চারণ

মনের মতন শব্দ কোনো।

মনের মতন সব কবিতা লেখার

অধিকার ওরা

করেছে হরণ।

প্রকাশ্য রাস্তায় যদি তারস্বরে চাঁদ, ফুল, পাখি

এমনকি নারী ইত্যাকার শব্দাবলী

করি উচ্চারণ, কেউ করবে না বারণ কখনো।

কিন্তু কিছু শব্দকে করেছে

বেআইনী ওরা

ভয়ানক বিস্ফোরক ভেবে।

 

স্বাধীনতা নামক শব্দটি

ভরাট গলায় দীপ্ত উচ্চারণ করে বারবার

তৃপ্তি পেতে চাই। শহরের আনাচে কানাচে

প্রতিটি রাস্তায়

অলিতে-গলিতে,

রঙিন সাইনবোর্ড, প্রত্যেক বাড়িতে

স্বাধীনতা নামক শব্দটি আমি লিখে দিতে চাই

বিশাল অক্ষরে।

স্বাধীনতা শব্দ এত প্রিয় যে আমার

কখনো জানিনি আগে। উঁচিয়ে বন্দুক,

স্বাধীনতা, বাংলাদেশ- এই মতো শব্দ থেকে ওরা

আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে সর্বদা।


অথচ জানেনা ওরা কেউ

গাছের পাতায়, ফুটপাতে

পাখির পালকে কিংবা নারীর দু’চোখে

পথের ধুলায়

বস্তির দুরন্ত ছেলেটার

হাতের মুঠোয়

সর্বদাই দেখি জ্বলে স্বাধীনতা নামক শব্দটি।

 কবিতা সম্পর্কে আপনার মতামত কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারেন।  


আরো পরুনঃ   বিরহের কবিতা-গাজী-ভাই


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন