বিশ্ব বিখ্যাত দশটি বাংলা কবিতা
সম্মানিত পাঠক গন আজকে আমরা আলোচনা করব বিশ্ব বিখ্যাত কবিতা গুলো নিয়ে। আজকের আলোচনায় আমরা জানবো আধুনিক কবিদের কবিতা সমগ্র এবং জীবনানন্দ দাশ কবিতা সমগ্র ও সেরা প্রেমের কবিতা এবং বিখ্যাত কবিদের প্রেমের কবিতা এবং পৃথিবীর বিখ্যাত কবিদের নাম ও জীবনানন্দ দাশের প্রেমের কবিতা আরো জানবো জীবনানন্দ দাশের শঙ্খচিল কবিতা। মেয়েদের গুপ্ত স্থান মেয়েদের পু -শি ক্রয় করার জন্য ক্লিক করুন - এখনই কিনুন
প্রেমে পড়লে সবাই কবি প্রেম করলে যেন কবি কবি ভাব বেড়ে যায় আমাদের মধ্যে। যাদের কবি কবি ভাব কিন্তু ছন্দের অভাব তারা কি করবে তারা কি তাদের প্রেমিক-প্রেমিকাকে কবিতা লিখে পাঠাবে না। বিশেষ করে যারা কবিতা পছন্দ করে তারা তাদের জন্য আজকে রয়েছে আমাদের বিশেষ বিখ্যাত কবিতা গুলো। কবিতাগুলো যদি আপনার ভাল লাগে তবে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন এবং যারা কবিতা পছন্দ করে তাদের সাথে এই কবিতাগুলো শেয়ার করতে পারে। কম দামে পণ্য কিনতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন www.gazivai.com।
দুরা চলুন শুরু করা যাক আমাদের কবিতাগুলো
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের
টাইটান জেল সরাসরি কিনতে ক্লিক- এখনই কিনুন
আরো পড়ুনঃ ছেলেদের
টাইটান জেল সরাসরি কিনতে ক্লিক- এখনই কিনুন
বিখ্যাত কবিদের কবিতা সমগ্র
তুমিই শুধু তুমি
– সৈয়দ শামসুল হক
তোমার দেহে লতিয়ে ওঠা ঘন সবুজ শাড়ি।
কপালে ওই টকটকে লাল টিপ।
আমি কি আর তোমাকে ছেড়ে
কোথাও যেতে পারি?
তুমি আমার পতাকা, আমার কৃষির বদ্বীপ।
করতলের স্বপ্ন-আমন ধানের গন্ধ তুমি
তুমি আমার চিত্রকলার তুলি।
পদ্য লেখার ছন্দ তুমি−সকল শব্দভুমি।
সন্তানের মুখে প্রথম বুলি।
আকাশ নিয়ে কবিতা
বুকে তোমার দুধের নদী সংখ্যা তেরো শত।
পাহাড় থেকে সমতলে যে নামি−
নতুন চরের মতো তোমার চিবুক জাগ্রত−
তুমি আমার, প্রেমে তোমার আমি।
এমন তুমি রেখেছ ঘিরে−এমন করে সব−
যেদিকে যাই−তুমিই শুধু−তুমি!
অন্ধকারেও নিঃশ্বাসে পাই তোমার অনুভব,
ভোরের প্রথম আলোতেও তো তুমি!
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ৩০,৩২,৩৪, সাইজের
ব্রা সরাসরি কিনতে ক্লিক- এখনই কিনুন
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের
স্তন - দুধ ছোট টাইট করার ক্রিম কিনতে ক্লিক- এখনই কিনুন
বিখ্যাত কবিতা সমগ্র
আনন্দ
– সুকুমার রায়
যে আনন্দ ফুলের বাসে,
যে আনন্দ পাখির গানে,
যে আনন্দ অরুণ আলোয়,
যে আনন্দ শিশুর প্রাণে,
যে আনন্দ বাতাস বহে,
যে আনন্দ সাগরজলে,
যে আনন্দ ধুলির কণায়,
যে আনন্দ তৃণের দলে,
যে আনন্দ আকাশ ভরা,
যে আনন্দ তারায় তারায়,
যে আনন্দ সকল সুখে,
যে আনন্দ রক্তধারায়
সে আনন্দ মধুর হয়ে
তোমার প্রাণে পড়ুক ঝরি,
সে আনন্দ আলোর মত
থাকুক তব জীবন ভরি।
আকাশলীনা
– জীবনানন্দ দাশ
সুরঞ্জনা, অইখানে যেয়োনাকো তুমি,
বোলোনাকো কথা অই যুবকের সাথে;
ফিরে এসো সুরঞ্জনা :
নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে;
ফিরে এসো এই মাঠে, ঢেউয়ে;
ফিরে এসো হৃদয়ে আমার;
দূর থেকে দূরে – আরও দূরে
যুবকের সাথে তুমি যেয়োনাকো আর।
কী কথা তাহার সাথে? – তার সাথে!
আকাশের আড়ালে আকাশে
মৃত্তিকার মতো তুমি আজ :
তার প্রেম ঘাস হয়ে আসে।
আধুনিক কবিতা সমগ্র
আধুনিক কবিতার বিষয়বস্তু নতুন অর্থাৎ পুরোনো হবার নয়। সময়ের সাথে সাথে দিন দিন নতুন ভাবে কবিতা লেখা হচ্ছে। আধুনিক কবিতার ভাষা হতে হবে সহজ, সরল, প্রিয় পাঠক এবং শ্রোতার ভালো লাগার বিষয় বস্তু হতে হবে।
কেবল বুকের দুকুল ভেঙ্গেছ নারী
কেবলই বুকের দুকুল ভেঙ্গেছ নারী??
তোমার জন্যতো আমার চারিধারই তৈরি ছিল।
প্রতিদিন চাদঁটা তোমার জন্য হাজির করতাম।
আর তুমি কিনা এক ফালি জোছনাতেই খুশি।
কতদিন তোমার অপেক্ষায় আছি।
তোমায় বিষের বীণে আমার হৃদয় ফালি ফালি হবে
আর তুমি কিনা কোলে তুলে নিলে??
কেবল হৃদয় নিয়েছ নারী??
আমি তো তোমার জন্য জীবন রেখেছি বাজী।
তুমি চাইলে স্বর্গের সুখ, পাতালের সুর,
বির্সজন দিতে পারি।।
তুমি কেবলই স্বর্গ দিলে যদি
আমি তোমার সাথে নরকের হতে পারি সাথি।
এরপর বেলা শেষে চৈত্রের ঘ্রাণ
আমি আকণ্ঠ তৃষিত চিরকাল, তোমার জন্য একাল, সেকাল
একটু সুখই চেয়েছি কেবল, তাও দিতে পারনি??
আমার জীবন, স্বর্গ নরক সবই তোমাকে দিলাম
এক মুঠো সুখ খুব বেশি দাবি ছিল কি বলো একবার??
হে অন্তপ্রান
বিষবাষ্প আছে কি? হৃদয় গহিন তলে,
বাজে কি বিষের বাঁশি? লাগে কি টান সিনায় সিনায়??
প্রখর চৈত্রের শেষে, বৃষ্টির ঘ্রাণে
উন্মাতাল হতো যে চাতকের চোখ
আজ তার কেবলই শূন্য দৃষ্টি।
বদলে যায়, থেমে যায় হৃদয়ের সব কলতান।
উড়ন্ত বলাকার দুরন্ত ডানায়
উঠত যে ঝড়, আপ্রাণ আগ্রহ বিশ্ব দেখার
আছে কি আজ সেই তৃষ্ণা??
তবে কি ধেয়ে আসছে? নেমে আসছে??
সবই কি তবে কেন্দ্রের প্রতি ধাবমান?
পার কি কিছু শুধাতে হে অন্তপ্রান?
গুটি গুটি পায়ে ছুটে চলে অভিসারে
উল্টে দেয়া, হৃদয়ের বেলা ভূমি
উর্বর হয়ে উঠে, নোনতা ফলের চাষে,
কিন্তু তাও থেকে যায় অনাবাদি,
আবার কখনো হয় আবাদ
এ মন বড়ই উচাটন, বার বার চায় বার বার
রসদ ফুরালো জড়ালো জীবন
বেলা শেষে ক্লান্ত সবাই, একে একে নীড়ে পানে
তুমি ও কি আছ সেই দলে??
জীবনের পথে, জীবনের রথে, সদা চলমান।
তোমরা তারে বল প্রেম
প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ দান
আর আমি চলি উল্টো পথে উল্টো রথে
আমার অন্ধ আঁখি, সবই হৃদয়ের অনুধাবন
আমি বলি, এ প্রেম নয়, দান নয়, মহা প্রয়াণ।।
বিখ্যাত কবিতা
আছে আমার হৃদয় আছে ভরে
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আছে আমার হৃদয় আছে ভরে,
এখন তুমি যা খুশি তাই করো।
এমনি যদি বিরাজ’ অন্তরে
বাহির হতে সকলই মোর হরো।
সব পিপাসার যেথায় অবসান
সেথায় যদি পূর্ণ করো প্রাণ,
তাহার পরে মরুপথের মাঝে
উঠে রৌদ্র উঠুক খরতর।
এই যে খেলা খেলছ কত ছলে
এই খেলা তো আমি ভালবাসি।
এক দিকেতে ভাসাও আঁখিজলে,
আরেক দিকে জাগিয়ে তোল’ হাসি।
যখন ভাবি সব খোয়ালাম বুঝি
গভীর করে পাই তাহারে খুঁজি,
কোলের থেকে যখন ফেল’ দূরে
বুকের মাঝে আবার তুলে ধর’।
অনন্ত প্রেম
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শতবার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয় গাঁথিয়াছে গীতহার–
কত রূপ ধরে পরেছ গলায়, নিয়েছ সে উপহার
জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।
যত শুনি সেই অতীত কাহিনী, প্রাচীন প্রেমের ব্যথা,
অতি পুরাতন বিরহমিলন কথা,
অসীম অতীতে চাহিতে চাহিতে দেখা দেয় অবশেষে
কালের তিমিররজনী ভেদিয়া তোমারি মুরতি এসে
চিরস্মৃতিময়ী ধ্রুবতারকার বেশে।
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে
অনাদি কালের হৃদয়-উৎস হতে।
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝে
বিরহবিধুর নয়নসলিলে, মিলনমধুর লাজে–
পুরাতন প্রেম নিত্যনূতন সাজে।
জীবনানন্দ দাশ কবিতা সমগ্র
আট বছর আগের একদিন – জীবনানন্দ দাশ
শোনা গেল লাশকাটা ঘরে নিয়ে গেছে তারে; কাল রাতে—ফাল্গুনের রাতের আঁধারে যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ মরিবার হল তার সাধ। বধু শুয়ে ছিল পাশে—শিশুটিও ছিল; প্রেম ছিল, আশা ছিল—জ্যোৎস্নায়—তবু সে ,
জীবনানন্দ দাশ
চলছি উধাও – জীবনানন্দ দাশ
চলছি উধাও, বল্গাহারা- ঝড়ের বেগে ছুটে শিকল কে সে বাঁধছে পায়ে! কোন্ সে ডাকাত ধরছে চেপে টুটি! -আঁধার আলোর সাগরশেষে প্রেতের মতো আসছে ভেসে! আমার দেহের ছায়ার মতো, জড়িয়ে আছে [
সেরা প্রেমের কবিতা
প্রেম
আমরা ঘুমায়ে থাকি পৃথিবীর গহ্বরের মতো—
পাহাড় নদীর পারে অন্ধকারে হয়েছে আহত—
একা—হরিণের মতো আমাদের হৃদয় যখন!
জীবনের রোমাঞ্চের শেষ হলে ক্লান্তির মতন
পান্ডুর পাতার মতো শিশিরে শিশিরে ইতস্তত
আমরা ঘুমায়ে থাকি!—ছুটি লয়ে চলে যায় মন!—
পায়ের পথের মতো ঘুমন্তেরা পড়ে আছে কত—
তাদের চোখের ঘুম ভেঙে যাবে আবার কখন!—
জীবনের জ্বর ছেড়ে শান্ত হয়ে রয়েছে হৃদয়—
অনেক জাগার পর এইমতো ঘুমাইতে হয়।
অনেক জেনেছে বলে আর কিছু হয় না জানিতে;
অনেক মেনেছে বরে আর কিছু হয় না মানিতে;
দিন—রাত্রি—গ্রহ—তারা পৃথিবীর আকাশ ধরে ধরে
অনেক উড়েছে যারা অধীর পাখির মতো করে—
পৃথিবীর বুক থেকে তাহাদের ডাকিয়া আনিতে
পুরুষ পাখির মতো—প্রবল হাওয়ার মতো জোরে
মৃত্যুও উড়িয়া যায়!—অসাড় হতেছে পাতা শীতে,
হৃদয়ে কুয়াশা আসে—জীবন যেতেছে তাই ঝরে!—
পাখির মতন উড়ে পায় নি যা পৃথিবীর কোলে—
মৃত্যুর চোখের পরে চুমো দেয় তাই পাবে বলে!
কারণ, সাম্রাজ্য—রাজ্য—সিংহাসন—জয়—
মৃত্যুর মতন নয়—মৃত্যুর শান্তির মতো নয়!
কারণ, অনেক অশ্রু—রক্তের মতন অশ্রুঢেলে
আমরা রাখিতে আছি জীবনের এই আলো জ্বেলে!
তবুও নক্ষত্র নিজে নক্ষত্রের মতো জেগে রয়!
তাহার মতন আলো হৃদয়ের অন্ধকারে পেলে
মানুষের মতো নয়—নক্ষত্রের মতো হতে হয়!
মানুষের মতো হয়ে মানুষের মতো চোখ মেলে
মানুষের মতো পায়ে চলিতেছি যতদিন—তাই,
ক্লান্তির পরে ঘুম, মৃত্যুর মতন শান্তি চাই!
কারণ, যোদ্ধার মতো—আর সেনাপতির মতন
জীবন যদিও চলে—কোলাহল করে চলে মন
যদিও সিন্ধুর মতো দল বেঁধে জীবনের সাথে,
সবুজ বনের মতো উত্তরের বাতাসের হাতে
যদিও বীণার মতো বেজে উঠে হৃদয়ের বন
একবার—দুইবার—জীবনের অধীর আঘাতে—
তবু, প্রেম,—তবু তারে ছিড়ে ফেঁড়ে গিয়েছে কখন!
তেমন ছিঁড়িতে পারে প্রেম শুধু!—অঘ্রাণের রাতে
হাওয়া এসে যেমন পাতার বুক চলে গেছে ছিঁড়ে!
পাতার মতন করে ছিঁড়ে গেছে যেমন পাখিরে!
তবু পাতা—তবুও পাখির মতো ব্যথা বুকে লয়ে,
বনের শাখার মতো—শাখার পাখির মতো হয়ে
হিমের হাওয়ার হাতে আকাশের নক্ষত্রের তলে
বিদীর্ণ শাখার শব্দে—অসুস্থ ডানারকোলাহলে,
ঝড়ের হাওয়ার শেষে ক্ষীণ বাতাসের মতো বয়ে,
আগুন জ্বলিয়া গেলে অঙ্গারের মতো তবু জ্বলে,
আমাদের এ জীবন!—জীবনের বিহ্বলতা সয়ে
আমাদের দিন চলে—আমাদের রাত্রি তবু চলে;
তার ছিঁড়ে গেছে—তবু তাহারে বীণার মতো করে
বাজাই, যে প্রেম চলিয়া গেছে তারই হাত ধরে!
কারণ, সূর্যের চেয়ে, আকাশের নক্ষত্রেরথেকে
প্রেমের প্রাণের শক্তি বেশি; তাই রাখিয়াছে ঢেকে
পাখির মায়ের মতো প্রেম এসে আমাদের বুক!
সুস্থ করে দিয়ে গেছে আমাদের রক্তের আসুখ!
পাখির শিশুর মতো যখন প্রেমেরে ডেকে ডেকে
রাতের গুহার বুকে ভালোবেসে লুকায়েছি মুখ—
ভোরের আলোর মতো চোখের তারায় তারে দেখে!
প্রেম কি আসে নি তবু?—তবে তার ইশারা আসুক!
প্রেমকি চলিয়া যায় প্রাণেরে জলের ঢেউয়ে ছিঁড়ে!
ঢেউয়ের মতন তবু তার খোঁজে প্রাণ আসে ফিরে!
যত দিন বেঁচে আছি আলেয়ার মতো আলো নিয়ে—
তুমি চলে আস প্রেম-তুমি চলে আস কাছে প্রিয়ে!
নক্ষত্রের বেশি তুমি—নক্ষত্রের আকাশের মতো!
আমরা ফুরায়ে যাই—প্রেম, তুমি হও না আহত!
বিদ্যুতের মতো মোরা মেঘের গুহার পথ দিয়ে
চলে আসি—চলে যাই—আকাশের পারে ইতস্তত!
ভেঙে যাই—নিভে যাই—আমরা চলিতে গিয়ে গিয়ে!
আকাশের মতো তুমি—আকাশে নক্ষত্র আছে যত—
তাদের সকল আলো একদিন নিভে গেলে পরে
তুমিও কি ডুবে যাবে, ওগো প্রেম, পশ্চিমসাগরে!
জীবনের মুখে চেয়ে সেইদিনও রবে জেগে জানি!
জীবনের বুকে এসে মৃত্যু যদি উড়ায় উড়ানি—
ঘুমন্ত ফুলের মতো নিবন্ত বাতির মতো ঢেলে
মৃত্যু যদি জীবনেরে রেখে যায়— তুমি তারে জ্বেলে
চোখের তারার পরে তুলে লবে সেই আলোখানি।
সময় ভাসিয়া যাবে দেবতা মরিবে অবহেলে
তবুও দিনের মেঘ আঁধার রাত্রির মেঘ ছানি
চুমো খায়! মানুষের সব ক্ষুধা আর শক্তিলয়ে
পূর্বের সমুদ্র অই পশ্চিম সাগরে যাবে বয়ে!
সকল ক্ষুধার আগে তোমার ক্ষুধায় ভরে মন!
সকল শক্তির আগে প্রেম তুমি, তোমার আসন
সকল স্থলের’ পরে, সকল জলের’ পরে আছে!
যেইখানে কিছু নাই সেখানেও ছায়া পড়িয়াছে
হে প্রেম, তোমার!—যেইখানে শব্দ নাই তুমি আলোড়ন
তুলিয়াছ!—অঙ্কুরের মতো তুমি—যাহা ঝরিয়াছে
আবার ফুটাও তারে! তুমি ঢেউ—হাওয়ার মতন!
আগুনের মতো তুমি আসিয়াছ অন্তরের কাছে!
আশার ঠোঁটের মতো নিরাশার ভিজে চোখ চুমি
আমার বুকের পরে মুখ রেখে ঘুমায়েছ তুমি!
জীবন হয়েছে এক প্রার্থনার গানের মতন
তুমি আছ বলে প্রেম, গানের ছন্দের মতো মন
আলো আর অন্ধকারে দুলে ওঠে তুমি আছ বলে!
হৃদয় গন্ধের মতো—হৃদয় ধুপের মতো জ্ব’লে
ধোঁয়ার চামর তুলে তোমারে যে করিছে ব্যজন।
ওগো প্রেম, বাতাসের মতো যেইদিকে যাও চলে
আমারে উড়ায়ে লও আগুনের মতন তখন!
আমি শেষ হব শুধু, ওগো প্রেম, তুমি শেষ হলে!
তুমি যদি বেঁচে থাক,—জেগে রব আমি এইপৃথিবীর পর—যদিও বুকের পরে রবে মৃত্যু—মৃত্যুর
কবর!
তবুও সিন্ধুর জল—সিন্ধুর ঢেউয়ের মতো বয়ে
তুমি চলে যাও প্রেম—একবার বর্তমান হয়ে—
তারপর, আমাদের ফেলে দাও পিছনে—অতীতে—স্মৃতির হাড়ের মাঠে—কার্তিকের শীতে!
অগ্রসর হয়ে তুমি চলিতেছ ভবিষ্যৎ লয়ে—
আজও যারে দেখ নাই তাহারে তোমার চুমো দিতে
চলে যাও!—দেহের ছায়ার মতো তুমি যাওরয়ে—
আমরা ধরেছি ছায়া—প্রেমের তো পারি নি ধরিতে!
ধ্বনি চলে গেছে দূরে— প্রতিধ্বনি পিছে পড়ে আছে—
আমরা এসেছি সব—আমরা এসেছি তার কাছে!
একদিন—একরাত করেছি প্রেমের সাথে খেলা!
এক রাত—এক দিন করেছি মৃত্যুরে অবহেলা
এক দিন—এক রাত তারপর প্রেম গেছে চলে —
সবাই চলিয়া যায় সকলের যেতে হয় বলে
তাহারও ফুরাল রাত! তাড়াতাড়ি পড়ে গেল বেলা
প্রেমেরর ও যে! — এক রাত আর এক দিন সাঙ্গ হলে
পশ্চিমের মেঘে আলো এক দিন হয়েছে সোনেলা!
আকাশে পুবের মেঘে রামধনু গিয়েছিল জ্বলে
এক দিন রয় না কিছুই তবু — সব শেষ হয় —
সময়ের আগে তাই কেটে গেল প্রেমের সময়;
এক দিন এক রাত প্রেমেরে পেয়েছি তবু কাছে!
আকাশ চলেছে তার — আগে আগে প্রেম চলিয়াছে!
সকলের ঘুম আছে — ঘুমের মতন মৃত্যু বুকে
সকলের, নক্ষত্রও ঝরে যায় মনের অসুখে
প্রেমের পায়ের শব্দ তবুও আকাশে বেঁচে আছে!
সকল ভুলের মাঝে যায় নাই কেউ ভুলে — চুকে
হে প্রেম তোমারে! — মৃতেরা আবার জাগিয়াছে!
যে ব্যথা মুছিতে এসে পৃথিবীর মানুষের মুখে
আরো ব্যথা — বিহ্বলতা তুমি এসে দিয়ে গেলে তারে —
ওগো প্রেম, সেই সব ভুলে গিয়ে কে ঘুমাতেপারে!
বিখ্যাত কবিদের প্রেমের কবিতা
তোমায় আমি
তোমায় আমি দেখেছিলাম বলে
তুমি আমার পদ্মপাতা হলে;
শিশির কণার মতন শূন্যে ঘুরে
শুনেছিলাম পদ্মপত্র আছে অনেক দূরে
খুঁজে খুঁজে পেলাম তাকে শেষে।
নদী সাগর কোথায় চলে ব’য়ে
পদ্মপাতায় জলের বিন্দু হ’য়ে
জানি না কিছু-দেখি না কিছু আর
এতদিনে মিল হয়েছে তোমার আমার
পদ্মপাতার বুকের ভিতর এসে।
তোমায় ভালোবেসেছি আমি, তাই
শিশির হয়ে থাকতে যে ভয় পাই,
তোমার কোলে জলের বিন্দু পেতে
চাই যে তোমার মধ্যে মিশে যেতে
শরীর যেমন মনের সঙ্গে মেশে।
জানি আমি তুমি রবে-আমার হবে ক্ষয়
পদ্মপাতা একটি শুধু জলের বিন্দু নয়।
এই আছে, নেই-এই আছে নেই-জীবন চঞ্চল;
তা তাকাতেই ফুরিয়ে যায় রে পদ্মপাতার জল
বুঝেছি আমি তোমায় ভালোবেসে।
পৃথিবীর বিখ্যাত কবিদের নাম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
.
রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
.
রোকনুজ্জামান খান
.
রেদোয়ান মাসুদ
.
শক্তি চট্টোপাধ্যায়
শঙ্খ ঘোষ
.
শামসুর রাহমান
.
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
.
সুকান্ত ভট্টাচার্য
সুকুমার রায়
.
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
.
সুফিয়া কামাল
.
সৈয়দ শামসুল হক
.
হুমায়ুন আজাদ
.আবুল হাসান
.
আল মাহমুদ
.
আসাদ চৌধুরী
.
কাজী নজরুল ইসলাম
.
গোবিন্দচন্দ্র দাস
.
জয় গোস্বামী
.
জসীম উদ্দীন
.
জীবনানন্দ দাশ
.
তসলিমা নাসরিন
.
নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য
.
নির্মলেন্দু গুণ
.
পূর্ণেন্দু পত্রী
.
মহাদেব সাহা
.
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
.
যতীন্দ্রমোহন বাগচী
যোগীন্দ্রনাথ সরকার
.
রফিক আজাদ,
জীবনানন্দ দাশের প্রেমের কবিতা
তোমাকে
একদিন মনে হতো জলের মতন তুমি।
সকালবেলার রোদে তোমার মুখের থেকে বিভা–
অথবা দুপুরবেলা — বিকেলের আসন্ন আলোয়–
চেয়ে আছে — চলে যায় — জলের প্রতিভা।
মনে হতো তীরের উপরে বসে থেকে।
আবিষ্ট পুকুর থেকে সিঙাড়ার ফল
কেউ কেউ তুলে নিয়ে চলে গেলে — নীচে
তোমার মুখের মতন অবিকল।
নির্জন জলের রঙ তাকায়ে রয়েছে;
স্থানান্তরিত হয়ে দিবসের আলোর ভিতরে
নিজের মুখের ঠান্ডা জলরেখা নিয়ে
পুনরায় শ্যাম পরগাছা সৃষ্টি করে;
এক পৃথিবীর রক্ত নিপতিত হয়ে গেছে জেনে
এক পৃথিবীর আলো সব দিকে নিভে যায় বলে
রঙিন সাপকে তার বুকের ভিতরে টেনে নেয়;
অপরাহে আকাশের রং ফিকে হলে।
তোমার বুকের পরে আমাদের পৃথিবীর অমোঘ সকাল;
তোমার বুকের পরে আমাদের বিকেলের রক্তিল বিন্যাস;
তোমার বুকের পরে আমাদের পৃথিবীর রাত;
নদীর সাপিনী, লতা, বিলীন বিশ্বাস।
জীবনানন্দ দাশের শঙ্খচিল কবিতা
মনে পড়ে সেই কলকাতা–সেই তেরোশো তিরিশ–
বস্তির মতো ঘর,
বৌবাজারের মোড়ে দিনমান
ট্রাম করে ঘরঘর।
আমাদের কিছু ছিল না তখন
ছিল শুধু যৌবন,
সাগরের মতো বেগুনি আকাশে
সোনালি চিলের মন।
ছেঁড়া শাড়ি পরে কাটাইতে দিন
বাঁটনা হলুদ মাখা
বিভারানী বোস, তোমার দু হাতে
ছিল দুটো শাদা শাঁখা,
শাদা শাঁখা শুধু তোমার দু হাতে
জুটিত না তেল চুলে,
তবুও আমরা দিতাম আকাশে
বকের পাখনা তুলে।
জুটিত না কালি কলমে আমার
কাগজে পড়িত টান,
তোমার বইয়ের মার্জিনে, বিভা,
লিখিতাম আমি গান।
পাশের বাড়ির পোড়া কাঠ এনে
দেয়ালে আঁকিতে ছবি।
আমি বলিতাম–’অবন্তী-বিভা’,
তুমি শুধাইতে ‘ঈগল কবি’
চক্ষে তোমার মিঙ্ যুগ ভাসে
কাঙড়ার ছবি ঐ নীল চোখে
আমার হৃদয়ে অনুরাধাপুর
পুরানো ফরাসি গানের বোকে
সেদিন আমার পথে পথে হাঁটা
সেও তম্বুরা মান্ডলিন
তোমার সেদিন ঘর সিঁড়ি ভাঙা
বাংলার পট, পুরোনো চীন।
পৃথিবীর মুখে তুড়ি দিয়ে দিয়ে
দুইটি হৃদয় সেই
ডাল তেল নুন জোটে না যাদের
জামা-শাড়ি কিছু নেই,
তবুও আকাশ জয়ের বাসনা
দু:খের গুলি সে যেন ঢিল,
আমরা দুজনে বেগুনি আকাশে
সোনালি ডানার শঙ্খচিল—
শরীরের ক্ষুধা মাটির মতন
স্বপ্ন তখন সোনার সিঁড়ি,
মানুষ থাকুক সংসারে পড়ে
আমরা উড়িব পৃথিবী ছিঁড়ি।
সকাল হয়েছে: চাল নাই ঘরে,
সন্ধা হয়েছে: প্রদীপ নাই,
আমার কবিতা কেউ কেনে নাকো?
তোমার ছবিও ঘুঁটের ছাই?
ছ মাসের ভাড়া পড়ে আছে না কি?
ঘরে নাই তবু চাল কড়ি নুন?
আকাশের নীল পথে পথে তবু
আমার হৃদয় আত্তিলা হূণ
আকাশের নীল পথ থেকে পথে
জানালার পর জানালা খুলে
ভোরের মুনিয়াপাখির মতন
কোথায় যে দিতে পাখনা তুলে।
সংসার আজ শিকার করেছে
সোনালি চিলেরা হল শিকার,
আজ আমি আর কবিতা লিখি না
তুমিও তো ছবি আঁকো না আর।
তবুও শীতের শেষে ফাল্গুনে
মাতাল যখন সোনালি বন
তেরোশো তিরিশ—দারিদ্র্য সেই
ফিরে চাই আজ সে যৌবন।
ফিরে চাই আমি তোমারে আবার
আমার কবিতা, তোমার ছবি—
শুধাতাম আমি ‘অনুরাধাপুর’—
শুধাইতে তুমি ‘শকুন কবি’।
সেই-যে আকাশ খোঁজার স্বপ্ন
দুখের ছররা—সে যেন ঢিল,
আমরা দুজনে বেগুনি আকাশে
সোনালি ডানার শঙ্খচিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন