প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র কী প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রঃ প্লেটো তার আদর্শ রাষ্ট্র উপস্থাপনের শুরুতেই ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সাদৃশ্য দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন 'The state is individual writ large.' কারণ মানব প্রকৃতিতে এমন কিছু রয়েছে, যা রাষ্ট্রের উপযােগী, আবার রাষ্ট্রে এমন কিছু রয়েছে, যা সমাজের উপযােগী। এই উপযােগিতাকে তিনি সাদৃশ্য বলে ব্যাখ্যা করেছেন। মানুষ ও রাষ্ট্র এমন একটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত, যার ফলে একটির জন্য যা ভালাে, তা অন্যের জন্য ভালাে না হয়ে পারে না। যেমন মানুষের চেতনা ও রাষ্ট্রের চেতনা পৃথক করে দেখা যায় না। রাষ্ট্রের চেতনা হচ্ছে নাগরিকদেরই চেতনা- যখন তারা রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে চিন্তা করে। Gazivai.com এ মোটা ও লম্বা হওয়ার ঔষধ মাত্র ২২০ টাকা থেকে শুরু ঔষধ কিনতে ক্লিক করুন - এখনই ঔষধ কিনুন
প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র কী
দি রিপাবলিক-এর বৈশিষ্ট্যসমূহঃ প্লেটোর রিপাবলিক গ্রন্থে আদর্শ রাষ্ট্রের যেসব বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠেছে তা নিম্নে ধারাবাহিকভাবে আলােচনা করা হলােঃ
(১) অবরােহ পদ্ধতিঃ রিপাবলিক গ্রন্থে উল্লেখিত রাষ্ট্রচিন্তায় রাষ্ট্রসম্পর্কিত বিভিন্ন নৈতিক, রাজনৈতিক এবং অধিবিদ্যা সংক্রান্ত সমস্যাদির বিশ্লেষণে প্লেটো যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন তা হলাে অবরােহ পদ্ধতি। তিনি রাষ্ট্র সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে পূর্ব কল্পিত কতকগুলাে ধারণা তৈরি করে নিয়েছেন এবং তা থেকে তার যাবতীয় সিদ্ধান্ত উৎসারিত হয়েছে।
প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র কি
(২) সংলাপ পদ্ধতিঃ প্লেটোর রিপাবলিকের আর একটি বৈশিষ্ট্য হলাে সংলাপ পদ্ধতি। তিনি তার প্রতিপাদ্য বিষয়কে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার জন্য কথােপকথন বা সংলাপ প্রক্রিয়া বেছে নেন এবং তার সব সংলাপে মূল চরিত্র হিসেবে সক্রেটিসকে তুলে ধরেন। সংলাপ পদ্ধতি অবলম্বন করার ফলে প্লেটোর উদ্দেশ্য অধিকতর সার্থকভাবে সাধিত হয়েছে।
(৩) মানব প্রকৃতির তত্ত্বঃ রিপাবলিকের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হলাে মানব প্রকৃতির তত্ত্ব। প্লেটো বলেন, মানুষের মন থেকেই রাষ্ট্রের উৎপত্তি হয়েছে এবং মনের মধ্যেই এর বাস। তার মতে, রাষ্ট্র এক প্রকার মনােজাত ফসল, এটা কোনাে চুক্তির ফল নয়।
(৪) নগররাষ্ট্র কেন্দ্রিকঃ রিপাবলিকের আর একটি বৈশিষ্ট্য হলাে এতে নগররাষ্ট্রের তথ্য বা উপাদান বেশি পরিলক্ষিত হয়। এই নগররাষ্ট্র হলাে সমাজের সাধারণ নীতিসমূহের বিশ্লেষণ এবং শ্রম বিনিময়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত সমাজের প্রকৃতি, যা মানব দক্ষতার ব্যক্তিগত সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সমানভাবে বিকশিত হয় এবং এর ফলে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সামাজিক জীবন লাভ করা যায়।
(৫) সুবিন্যস্ত রাজনৈতিক তত্ত্বঃ সমস্যা ও বিষয়বস্তুর উৎকর্ষ ও বিভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও রিপাবলিক গ্রন্থের রাজনৈতিক তত্ত্ব ছিল সরল ও সুবিন্যস্ত। প্লেটোর মূল বক্তব্যগুলাে এবং তার বৈশিষ্ট্যাবলীকে সার-সংক্ষেপ করা যায়।
(৬) সমস্যার ধারণাঃ রিপাবলিক একটি কাল্পনিক রচনা হলেও তা মানুষের বাস্তব সমস্যার পর্যবেক্ষণ, অনুধাবন এবং চিহ্নিতকরণের পদ্ধতি অবলম্বনে রচিত। প্লেটোর রচনার মধ্যে তৎকালীন এথেন্সের বাস্তব সমস্যার যে নিখুঁত প্রতিবেদন বিধৃত হয়েছে তা তার কল্পনাবিলাসকে গৌণ করেছে।
(৭) সুশৃখল মতবাদঃ প্লেটো রিপাবলিক গ্রন্থে তার রাষ্ট্রীয় মতবাদ সুশৃঙ্খলভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। ফলে এটা একাধারে ঐক্যবদ্ধ এবং সহজবােধ্য। যদিও তা নগররাষ্ট্রের রাজনৈতিক ধারণা দ্বারা এমনভাবে আচ্ছন্ন যে এর প্রতি সুবিচার করা দুরূহ। তবুও তার রাষ্ট্রীয় মতবাদটি ছিল সুস্পস্ট, সুশৃঙ্খল এবং সহজবােধ্য।
(৮) আদর্শ রাষ্ট্রঃ প্লেটোর রিপাবলিকের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলাে আদর্শ রাষ্ট্রব্যবস্থা। তখন গ্রীসের পরিস্থিতি ছিল খুবই বিশৃঙ্খল। গ্রীসের এই রাজনৈতিক স্থিতিহীনতা দূর করার জন্যই প্লেটো তার রিপাবলিক গ্রন্থে একটি আদর্শ রাষ্ট্রের কাঠামাে বর্ণনা করেন। মূলত বস্তুজগতে একটি রাষ্ট্রের তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক রূপ কীরূপ হওয়া উচিত আদর্শ রাষ্ট্রের মাধ্যমে প্লেটো তা দেখানাের চেষ্টা করেছেন।
(৯) ন্যায়নীতিঃ প্লেটোর রিপাবলিক গ্রন্থের একটি বিশেষ দিক হলো ন্যায়নীতি। প্লেটোর মতে, ন্যায়নীতি বলতে সেই নীতিকে বুঝায় যা প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার যােগ্যতা অনুযায়ী স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে কর্তব্য পালনের নির্দেশ দেয়।
(১০) দার্শনিক রাজাঃ রিপাবলিক গ্রন্থের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলাে দার্শনিক রাজার শাসন। প্লেটো তার আদর্শ রাষ্ট্রের শাসন পরিচালনার ভার দার্শনিক রাজার হাতে অর্পণ করেছেন। তার মতে, প্রকৃত দার্শনিক সেই ব্যক্তি যিনি সত্যের উপাসক, সৌন্দর্য্যের পিপাসু, নম্রতার প্রতীক, যার কোনাে লােভ-লালসা ও ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকবে না।
(১১) সাম্যবাদঃ রিপাবলিক গ্রন্থের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলাে সাম্যবাদ। প্লেটো বলেন সাম্যবাদের মূল লক্ষ্য মানুষের চিত্তকে পরিপূর্ণরূপে পরিশুদ্ধ করে ন্যায়ধর্মের অনুগত করা। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, সাম্যবাদের মাধ্যমে ব্যক্তির আত্মকেন্দ্রিক চেতনা পরিবর্ধিত হয়ে সমাজকেন্দ্রিক হতে পারে।
(১২) শিক্ষা ব্যবস্থাঃ প্লেটোর দি রিপাবলিক গ্রন্থে এক বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে তার শিক্ষাতত্ত্ব। প্লেটোর মতে, শিক্ষাই মানব প্রকৃতি গঠনের একমাত্র প্রত্যক্ষ উপায়। শিক্ষার মাধ্যমেই কেবল সুসংহত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা গড়ে তােলা সম্ভবপর। তার মতে রাষ্ট্রের নাগরিকগণ যদি শিক্ষিত হয়, তাহলে তারা সহজেই সকল সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবে।
(১৩) নারী শিক্ষাঃ রিপাবলিক গ্রন্থে নারী শিক্ষার প্রতি সমধিক গুরুত্ব আরােপ করা হয়েছে। প্লেটো বিশ্বাস করতেন যে, নারী-পুরুষের মধ্যে যােগ্যতার দিক দিয়ে কোন পার্থক্য নেই। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে তারা অভিন্ন এবং উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে নারীরা নিজেদের অভিভাবকের মর্যাদায় উন্নীত করতে পারে। এ কারনে তিনি নারীদের তার শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তাদের জন্য অভিন্ন শিক্ষাসূচি প্রণয়ন করেন।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র বাস্তবের সাথে সম্পূর্ণরূপে সম্পর্কহীন। তার এ ধরনের কল্পিত রাষ্ট্র বাস্তবে কোন দিনই ছিল না। কিন্তু তার আদর্শ রাষ্ট্রের অবাস্তবতা সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। তারপরও তিনি ভেবেছিলেন বাস্তবে যে রাষ্ট্র তার কল্পিত আদর্শ রাষ্ট্রের যত বেশী নিকটবর্তী হবে সে রাষ্ট্র ততবেশী মঙ্গলময় হবে।
আরও পড়ুন: মাথা ব্যথার ১০ টি ঔষধের নামের তালিকা
আরো
পড়ুনঃ কাশির ১০ টি ঔষধের নাম ও দাম জেনে নিন
আরও পড়ুন: সর্দির ১০ টি ভালো ঔষধ নাম
আরো পড়ুনঃ ১০ টি কৃর্মির ঔষধের
নাম ও দাম
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন