আবেদ সাহেবের জন্ম ১৯৪২ সালে ওনার বাবা ইসমাইল হাওলাদার তিনি ছিলেন অতি সাধারণ মানুষ,
সাধারণ একটি চাকরি করতেন তাদের সংসারে প্রচুর অভাব অনটন পড়ে থাকতো ওনার শেষ বয়সে একটি পুত্র সন্তান হয় যিনি হলেন আমাদের গল্পের মূল চরিত্রের এই আবেদ সাহেব। Gazivai.com এ মাত্র ১০০ টাকা থেকে ব্লুটুথ হেডফোন সরাসরি কিনতে ক্লিক করুন - এখনই কিনুন
আবেদ সাহেব ছোট কাল থেকেই দেখছেন আবেদ সাহেবের বাবা তার গ্রামের স্কুলের বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে স্কুলের বেতন দিতে পারছে তো পারছে না, একদা চিন্তা করলো ছেলে কে কি স্কুলে Metric,intermittent পর্যন্ত পড়াবো নাকি কোন কৃষি কাজ অথবা কোন দোকানে কাজে লাগিয়ে দিবো.?
এক সময়ে চিন্তা করে বললো না থাক ছেলে কে পড়া-লেখা'ই করাবো
যখন তার লেখা—পড়া শেষ হয়ে গেল
তিনি চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিচ্ছেন তখন তার বাবা ইসমাইল হাওলাদার এর বয়স প্রায় অনেক বেশি তো ইসমাইল হাওলাদার যখন মৃত্যুর পথ যাত্রী তখন আবেদ সাহেব ঢাকায় আসলেন একটি চাকরির জন্য.
SO ঢাকায় এসেই তিনি একটি চাকরি পেলেন সেই চাকরি করে যা উপার্জন করতেন তার থেকে অর্ধেকের বেশি টাকা তার বাড়িতে পাঠাতেন, বেশি অর্ধেক টাকা বাড়ি কেন পাঠাতেন..?
কারণ ওনার বাবা অসুস্থ তাদের আর কোন আর্থিক সম্বল নেই এই শুরু হলো আবেদ সাহেবের টানা পড়া।
ওনি ওনার জীবনে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সে কিন্তু সেটা হয়নি Because কোন ধরনের আর্থিক সহায়তা তার ছিলো না।
বরং তার বাবা ইসমাইল হাওলাদার কে টাকা পয়সা দিয়ে যেতে হয়েছিল
তার বাবা ইসমাইল হাওলাদার তিনি ছিলেন এখন সৎ লোক এটা ওনি ভালো করে জানতেন ।
So আবেদ সাহেব যখন বিয়ে করেন তখন তার বয়স হয়েছিল ৩১ বছর, তখন তার বাবা অনেক বৃদ্ধ ।
এক সময় তাঁর পিতা ও তাঁর মাতা উভয়ে ঢাকায় তাদের বাড়ীতে আসলেন এবং বেশ কিছদিন তাদের বাড়ীতে থাকলেন আবেদ সাহেব তাদের কে ঢাকা শহর ঘুরিয়ে দেখলেন॥
এই কথাগুলো ১৯৮২ সালের কথা
So তখন আবেদ সাহেব চিন্তা করলো আমার বাবা মা আমাকে কোন টাকা পয়সা দিয়ে যেতে পারলো না বরং আমাকেই তাদেরকে টাকা পয়সা দিয়ে টানতে হচ্ছে ।
যখন তারা অসুস্থ তখন আমি তাদের কে ঢাকায় নিয়ে এসেছি
কিন্তু আমি আমার সন্তানদের কে ভালো কিছু করে দিয়ে যাবো ভালো স্কুলে পড়াবো
আমার ছেলে কিংবা মেয়ে যেন কোন আর্থিক সংকট না দেখে
১৯৮৫ সালে আবেদ সাহেবের প্রথম ও একমাত্র পুত্র সন্তান হলো. নাম আসিফ
আবেদ সাহেব ছেলেকে অসম্ভব ভালোবাসতো আবেদ সাহেবের বাবা মা ও তাঁর একমাত্র নাতি কে অনেক ভালোবাসতো
যখন ১৯৯০ সাল তখন আবেদ সাহেবের বাবা ইসমাইল হাওলাদার প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলো তাতে অনেক টাকা খরচ হলো
কিন্তু...... নাহ্..... কোন লাভ হলো না তাতে
১৯৯২ সালে যখন আবেদ সাহেবের বাবা মৃত্যু পথযাত্রী তখন তাঁর বাবা ইসমাইল হাওলাদার তাকে ডেকে নিয়ে তাঁর হাত ধরে বললেন: দেখো তুমি আমার ছেলে তুমি আমার জীবনের শেষ বিশ বছর টাকা পয়সা দিলা
আমি আসলে তোমার জন্য কোন টাকা পয়সা রেখে যেতে পারলাম না।
এই কথা বলে তার বাবা কাদতে কাদতে মারা গেলেন অতঃপর তাকে আজিমপুর কবর স্থানে তাকে কবর দেওয়া হলো ।
আবেদ সাহেব তার ছেলেকে নিয়েই ব্যাস্ত হয়ে পড়ল
এরপর আবেদ সাহেব তার চাকরি বাদ দিয়ে ব্যাবসা শুরু করলেন
সে তার ব্যবসা থেকে অনেক টাকা আয় করতে লাগলেন যা তার কল্পনার বাহিরে ছিলো।১৯৯৮ এর দিকে তিনি দেখলেন অসংখ্য টাকা তার পরিবারে ঢুকছে।
আবেদ সাহেবের ছেলে বড় হতে লাগল
যখন তার ছেলের একটু ঠান্ডা লাগতো তিনি দৌঁড়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতেন কারণ উনার মনে আছে এঁকদা উনার প্রচণ্ড জ্বর হয়ে ছিলো কিন্তু উনার বাবা উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন নাই ।
So উনি চেয়েছেন ওনার ছেলের সমস্ত চিকিৎসা তাড়াতাড়ি হবে অতি দ্রুত হবে সবচেয়ে ভালো হাসপাতালে হবে , সবচেয়ে ভালো স্কোয়ার হাসপাতাল তিনি স্কয়ারে নিয়ে আসতেন। সবচেয়ে ভালো স্কুলে পড়াতেন সে বললো আমার ছেলেকে English medium এ পড়াবো আমার ছেলে সবচেয়ে ভালো নামকরা university তে পড়াশোনা করবে আমার ছেলেকে বিদেশে নিয়ে পড়াবো ।
আমার বাবা ইসমাইল হাওলাদার আমাকে কিছুই দিতে পারেনি কিন্তু আমি আমার ছেলে কে সবকিছু দিয়ে যাবো |
তারপর যখনই আসিফ বড় হতে লাগল আসিফের বয়স যখন ২৫ হলো তখন already অনেক কিছু দেওয়া হয়েছে অনেক টাকা দেওয়া হয়েছে ফ্ল্যাট বাড়ি এরপর গাড়ি ইত্যাদি ইত্যাদি |
এই আবেদ সাহেবের একমাত্র ছেলে বড় হলো তখন আবেদ সাহেব একটি অদ্ভুদ জিনিস লক্ষ্য করলেন সেটা হচ্ছে তাঁর ছেলে কিছুই করতে পারছে না তার ছেলে ইউনিভার্সিটি তে ইউনিভার্সিটি পাশ করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে পড়া লেখায় বেশি মনোযোগ নাই, একটা মেয়েকে বিয়ে করলো প্রেম করে কিন্তু বিয়েটাও বেশিদিন স্থায়ী হলো না.
আবেদ সাহেবের বয়স যখন প্রায় ৬০/৬৫ তখন তিনি তাঁর ছেলেকে যখন তার Business বুঝিয়ে দিতে যাবেন
তখন তিনি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন যে আসিফ এই ব্যাবসা রাখতে পারবে না .
কারণ সে অফিসে আসে আবার আসে না
তার দামী গাড়ী কেনা দামী দামী বাড়ি এগুলোতেই তার আগ্রহ বেশী.
কিন্তু ব্যাবসা কীভাবে চলবে কীভাবে চালাতে হবে কোন ধরনের দায়িত্ববোধ তার নাই এ নিয়ে তাঁর কোন মাথা ব্যাথা ছিলো না.
তারপরে দেখা গেল আসিফ তার ছেলে দিনদিন তার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে ফেলল
দেখা গেল আসিফ তার বাবাকে ATM মেশিন এর মত ব্যাবহার করলে আরম্ভ করলো যখন টাকা প্রয়োজন টাকা নেয়
না লাগলে কোন খুঁজ খবর নেয় না তারপর আসিফ কয়েকদিন বিদেশে পড়ে আসলো তারপর দেশে ফিরে আসলো কিছু ভালো খারাও বন্ধু বান্ধব নিয়ে সময় পার হয়ে যাচ্ছে
তখন আবেদ সাহেব হঠাৎ চিন্তা করলো আমি তো আমার ছেলেকে সবই দিলাম কিন্তু আমার বাবা আমাকে কিছুই দিতে পারেনি আমি আমার ছেলেকে শিক্ষা চিকৎসা সবকিছু ভালো দিলাম.
কিন্তু আমার ছেলে কিছুই পারতেছে না
এবং আমি দেখলাম দিন কি দিন আমার ছেলের একটি বাজে অবস্থা
আমার ছেলের আমার ব্যাপারে বিন্দু মাত্র কৃতজ্ঞবোধ তো নাই তাকে যা কিছু দিয়ে যাওয়া হয়েছে This is absolutely regrettable
আবেদ সাহেব আজিমপুর কবরস্থানে গেলেন গিয়ে তার বাবার কবর স্থানে খুব কাদলেন
বাবার কবরের কাছে বললেন যে
বাবা!
তুমি আমাকে কোন টাকা পয়সা দিয়ে যেতে পারো নাই
কিন্তু আমি হয়তো আর কিছুদিন পর কবরে চলে যাবো
আমি আমার ছেলেকে সমস্ত টাকা পয়সা দিয়ে গিয়েছি
কিন্তু বাবা !
তুমি আমাকে একটি গুরুত্তপূর্ণ জিনিস শিখিয়ে গিয়েছ সেটা হচ্ছ দায়িত্ববোধ
আমি নিজের কাজ নিজে করতে শিখছি
আমি অনেক কষ্টের পরে পেতে শিখছি আমি না পাওয়া থেকে পেতে শিখছি
আমি শিখেছি কীভাবে জীবনে দায়িত্ব নিতে হবে
আমি হাল ছেড়ে দেইনি তুমি আমাকে হাল হাল ছাড়তে শিখাওনি
তুমি আমাকে সততা শিখিয়েছো
শিখিয়েছো ধর্য ধরতে, তুমি আমাকে অল্পে কীভাবে তুষ্ট থাকা যায় তুমি অল্পে তুষ্ট থাকা শিখিয়েছো.
আর অন্যদিকে আমি আমার ছেলেকে সেরেফ টাকা ছাড়া আর কিছুই শিখাই নাই
না কোন দায়িত্ববোধ না কোন সততা না কোনভাবে অল্পে তুষ্ট থাকা
আমি এগুলো কিছুই শিখাতে পারিনি।
তুমি আমাকে যা দিয়ে গিয়েছ বাবা সেটা কোন টাকা ছিলো না তবে আমি তার দ্বারা অনেক কিছু পাইছি অনেক কিছু করেছি অনেক কিছু শিখেছি
আর অন্যদিকে আমি আমার ছেলেকে টাকা দিতে পেরেছি কিন্তু কোন আখলাক কোন দায়িত্ববোধ কোন সততা শিখাতে পারিনি ।
বাবা! তুমিই পেরেছো আমাকে কিছু শিখাতে
যা দিয়ে জীবনে অনেক বড় হওয়া যায়
আর আমি আমার ছেলেকে টাকা দিয়ে কিছুই শিখাতে পারলাম না ||
|| সমাপ্ত ||
লেখক: মাহমুদ হাসিব
ইয়াহইয়া আমীন স্যার এর একটি ভিডিও থেকে কালেক্ট করা হয়েছে ||
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন